অনেকেই রুবিকস কিউবের সমাধান করার কৌশল জানতে ইচ্ছুক। রুবিকস কিউবের বিশেষ বৈশিষ্ট্যই হল এর বৈচিত্র্য। গাণিতিকভাবে প্রমাণ করা যায় যে,রুবিকস কিউবের ঠিক 43,252,003,274,489,856,000 টি অনন্য বিন্যাস পাওয়া সম্ভব!) তাই, কোন বিশেষ পদ্ধতি বা এলগোরিদম ব্যবহার না করে রেন্ডম মুভ দিয়ে এটা সমাধান করার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
কিন্তু, রুবিকস কিউব সমাধান করার জন্য আগে এর মুভ নোটেশন জানতে হবে। কারণ, রুবিকস কিউব সমাধানের বিভিন্ন অবস্থার জন্য যেসব মুভ দেওয়া লাগে তা মুভ নোটেশনের মাধ্যমে সহজে প্রকাশ করা যায়, আর সেভাবে এলগোরিদম ব্যবহার করে সমাধান করা যায়।
(আর… এলগোরিদম বিষয়টা আসলে কিছুইনা, এটাকে সোজা বাংলায় বলা যেতে পারে কার্যপদ্ধতি, অর্থাৎ, যেসব মুভ দিলে কোনে বিশেষ অংশ মেলানো যাবে সেগুলোর সমষ্টিই হল এলগোরিদম)
১. বিভিন্ন ব্লকের নাম:
একটা রুবিকস কিউব খুললে দেখা যাবে যে, এতে ৬টা তল থাকে, যার প্রত্যেকটির মাঝখানে একটি করে মোট ৬টি ব্লক থাকে; যেগুলোতে মাত্র একটাই রং থাকে। এই ব্লকগুলোকে বলা হয় সেন্টার পিস। যেকোন ভাবেই ঘোরান না কেন, এই সেন্টার পিসকে পুরো কিউবকে রোটেট না করলে তার অবস্থান থেকে সরানো যাবে না। তাই,সেন্টার পিসই একটা তলের আসল রং নির্দেশ করে। তাই আমাদের লক্ষ্য থাকবে যাতে করে সেন্টার পিসের রং অনুসারে আমরা অন্যান্য ব্লক গুলোকে সাজাতে পারি।
এছাড়া, ৮ টা ব্লক আছে (আটটি কোণের দিকে) যাদের তিনটি করে রং আছে।এদের বলা হয় কর্নার পিস।
আর বাকী ১২ টা ব্লকের নাম মিডল পিস বা এজ।
২. লেয়ার:
রুবিকস কিউবের ৩x৩x১ পার্টের নাম লেয়ার অর্থাৎ, একটা তল ঘুরালে তার সম্পূর্ণ যে অংশটুকু ঘোরে। কিউবের বিভিন্ন লেয়ারের বিভিন্ন নাম আছে। একটা কিউবের যেমন ৬টা তল আছে, তাই এর লেয়ারও ৬টা। নিচের চিত্রে বিভিন্ন লেয়ার দেখানো হল।
এই লেয়ারের সংক্ষিপ্ত এক অক্ষরের নামগুলো দিয়েই মুভ নোটেশন বোঝানো হয়। তাই এগুলো মনে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণ।
৩. লেয়ারের মুভ:
লেয়ারের মুভ দুইরকম হতে পারে। ঘড়ির কাঁটার দিকে(ক্লকওয়াইজ) আর বিপরীত দিকে (কাউন্টার ক্লক ওয়াইজ)। যদি শুধু লেয়ারের নাম দেওয়া হয় তবে ক্লকওয়াইজ আর লেয়ার ইনভার্স মানে কাউন্টার ক্লক ওয়াইজ মুভ।
যেমন-F’ U মানে সামনের লেয়ারকে ৯০ ডিগ্রি (অর্থাৎ একবার) ঘড়ির কাঁটার বিপরীত দিকে এবং একবার উপরের লেয়ারকে ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরাতে হবে।
_____________________________
**পরবর্তী পর্বে থাকছে সমাধানের জন্য লেয়ার বাই লেয়ার এলগোরিদম
(চলবে)
————————————————–
**এই ব্লগ সিরিজ ২০০৮ সালে সামহোয়ারইন ব্লগে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়।
রুবিকস কিউব সিরিজের অন্যান্য পর্ব:
- রুবিকস কিউব (শেষ পর্ব ) : রুবিকস সমাধানের আরও কিছু কৌশল
- রুবিকস কিউব (পর্ব ৪) : রুবিকস কিউবের সমাধান
- রুবিকস কিউব (পর্ব ২): রুবিকস কিউব সমাধান: আশ্চর্য সব রেকর্ড!
- রুবিকস কিউব (পর্ব ১) : এটা আসলে কী?